16 Nov 2024, 02:42 am

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত : আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিকে ‘কল্পনাপ্রসূত’ বলে দাবি করেছে দলটি। এই মামলাকে ‘ঘৃণ্যতম ও জঘন্যতম অসাংবিধানিক ও বেআইনি’ দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাতে ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই দাবি করা হয়।

ইত্তেফাকের পাঠকদের জন্য পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

“৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে লেখা সংবিধানে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরোধী অপরাধীদের বিচারের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছিল, সেই অঙ্গীকার পূরণে ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সরকার কর্তৃক প্রণীত আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের আওতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। জাতির অঙ্গীকার পূরণে এই আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছিল। এই বিচার সারা পৃথিবীতে প্রশংসিত হয়েছিল। এই বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং এই বিচারের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য প্রতিশোধ নেয়ার লক্ষ্যে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এবং অসাংবিধানিক ও অবৈধ তথাকথিত অন্তবর্তী কালীন সরকার বঙ্গবন্ধু কন্যার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক তথ্যের ভিত্তিতে গণহত্যার মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা‌ দায়ের করে। আইনের শাসনের সকল নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অসাংবিধানিক ও অবৈধ সরকারের এই ঘৃণ্যতম মধ্যযুগীয়, জঘন্য এবং অসাংবিধানিক ও বেআইনি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, নিন্দা ও ঘৃণা জানাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সংবিধান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এই ঘৃণ্য প্রক্রিয়া বাতিল করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।

১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময় প্রণীত আইনের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উদ্যোগে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথে যুক্ত ব্যক্তিবর্গের বিচারের জন্য যে ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়েছিল, সেই ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবীকে প্রহসনমূলকভাবে চিফ প্রসিকিউটার নিয়োগ দেয়া হয়। এটি জাতির সাথে এক জঘন্য মশকরা।

গণহত্যা আন্তর্জাতিক আইনের অধীন সংজ্ঞায়িত একটি বিশেষ আন্তর্জাতিক অপরাধ। জাতিসংঘ ঘোষিত ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশনের (Convention on the Prevention and Punishment of the Crime of Genocide) বিধান অনুযায়ী গণহত্যার বিচার হয়ে থাকে। ঐ কনভেনশনে গণহত্যার সুনির্দিষ্ট আইনি সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এই কনভেনশন অনুযায়ী গণহত্যা হলো হত্যাকান্ড সহ এমন ক্ষতিকারক কাজ যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে, সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে, কোন জাতি, গোষ্ঠী, সম্প্রদায় কিংবা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধ্বংস করা। জুলাই- আগস্টে বাংলাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে যে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য চালানো হয়েছিল, সেটি সারা বিশ্ব দেখেছে। সন্ত্রাসীরা পুলিশ সহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের কীভাবে হত্যা করেছে সেটি আমরা সকলে দেখেছি। বরং দেশব্যাপী পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের টার্গেট করে যে হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে, পাশাপাশি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীসহ   অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর মানুষকে হত্যাসহ যে অকথ্য নির্যাতন চালানো হচ্ছে, সেটিই গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে। গণহত্যা কনভেনশনে গণহত্যার সংজ্ঞায় যে শর্তগুলো আছে, এই হত্যাকান্ড ও সন্ত্রাস সে সকল শর্ত পূরণ করে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনে করে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক ও অবৈধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মিথ্যা ও কাল্পনিক তথ্যের ভিত্তিতে যে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এটি নিন্দিত হবে। বাংলাদেশের মানুষ এবং বিশ্ব সম্প্রদায় এই ষড়যন্ত্রমূলক উদ্যোগকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করবে। আমাদের মনে রাখা উচিত, স্বাধীন বাংলাদেশে এ যাবত কয়েক দফা অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক শক্তি আমাদের উপর চেপে বসেছিল। জনগণ এই অগণতান্ত্রিক শক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের আদালতের মতো আমাদের সুপ্রিম কোর্টও এই ধরনের অসাংবিধানিক শক্তিকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। আমাদের পবিত্র সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭খ অনুযায়ী সংবিধান লঙ্ঘন করে কোন অসাংবিধানিক শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করলে তার শাস্তি দেশের প্রচলিত আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড।  সংবিধান লঙ্ঘনকারী ও অবৈধ গোষ্ঠীকে বলবো, আর বিলম্ব না করে অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে সরে যান। অন্যথায়, জনগণের পবিত্র ইচ্ছার প্রতিফলন এই সংবিধান এবং ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না।

জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
#Bangladesh #BangladeshCrisis #BangladeshUnderFascism #SaveBangladesh”

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 3290
  • Total Visits: 1247249
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শনিবার, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১৩ই জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ২:৪২

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
18192021222324
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018